হাওড়া গ্ৰামীণ জেলায় শ্যামপুর,উদং, ফতেপুর, নওপাড়া,নারিট,নোরিট,হিরোর, গাজীপুর,কলবাঁশ,জয়পুর সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় বাঘরোল (চলতি কথায় মেছো বিড়াল) এর বিচরণ ক্ষেত্র।এই সমস্ত রাস্তা গুলিতে দুই চাকা থেকে চার চাকার রান,বাস,লরি সহ অন্যান্য গাড়ি চলাচল করে।বাঘরোল আছে এই সমস্ত এলাকায়। এদের রাস্তা পারাপার করার জন্য কোন ও করিডর না থাকার কারণে প্রতিদিন কোথাও না কোথায় বাঘরোল প্রাণ হারাচ্ছে। এর পাশাপাশি মানুষ বাঘরোল দেখতে পেলে ভয়ে মেরে ফেলছে।বারোর নিরীহ প্রাণী।এরা মানুষের বা পশুর কোন ক্ষতি করে না।এরা শুধুমাত্র মাছ শিকার করে।
শ্যামপুর থানার রামনগর বাসুদেবপুরে রাস্তা পারাপার করার সময় মারা পড়ে একটি বারোর। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান এলাকার পরিবেশ কর্মী অর্পণ দাস। তিনি বনদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। খবর পেয়ে বনদপ্তরের কর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে মৃত বাঘরোলটিকে উদ্ধার করে গড়চুমুক প্রাণী চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যান।
রাস্তা পারাপারের সময় গাড়ির ধাক্কায় বা গাড়ি চাপা পড়ে জেলার একাধিক জায়গায় প্রায় প্রতিদিনই বাঘরোলের মতো রাজ্যপ্রাণীর মৃত্যু হওয়ায় ক্ষুব্ধ পরিবেশ কর্মীরা। তাঁদের মতে, হাওড়া গ্ৰামীণ জেলার একাধিক জায়গা বারোর সহ অন্যান্য প্রাণীর বিচরণ ক্ষেত্র। কিন্তু এইসব এলাকায় রাস্তায়গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণের সেভাবে কোন ও ব্যবস্থা নেই।যে কারণে প্রায় প্রতিদিনই গাড়ির ধাক্কায় বা গাড়ি চাপা পড়ে বাঘরোল সহ অন্যান্য প্রাণীর মৃত্যু ঘটছে।তাই যে সমস্ত এলাকা দিয়ে বাঘরোল সহ অন্যান্য প্রাণী রাস্তা পারাপার করে, সেইসব এলাকা চিহ্নিত করণ করে সচেতনতা মূলক বোর্ড লাগানোর পাশাপাশি গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণে রাস্তায় বাম্পার তৈরী এবং বাস চালকদের সচেতন করার জন্য সচেতনতা শিবির করা হোক।এর আগেও রামনগর, বাসুদেবপুর, জয়পুর,নারিট,সিরোল, পূর্ব গাজীপুর সহ একাধিক এলাকায় পথ দূর্ঘটনায় বাঘরোল, শিয়াল,সাপ,গোসাপ,বেঁজি( নেউল ) প্রাণ হারিয়েছে। কোথাও কোথাও মানুষ এদের দেখা মাত্র পিটিয়ে মেরে ফেলছে। ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে কেহ কেহ এদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে। পরিবেশ কর্মীরা জানাচ্ছেন ২০১৮ সাল থেকে এই বৎসরের জুলাই মাস পর্যন্ত এই সমস্ত এলাকার পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে ১৫০ টির ও বেশী বাঘরোল, শিয়াল সহ অন্যান্য প্রাণীর মৃত্যু হয়েছে।শ্যামপুরে রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য গাড়ির গতি বৃদ্ধি পাওয়ায় ঐ এলাকায় এই ঘটনা বেশি করে ঘটছে।
হাওড়া জেলা যৌথ পরিবেশ মঞ্চ-র সদস্য-সদস্যারা এলাকায়-এলাকায়, স্কুল-কলেজ, সংগঠন এ বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ এর জন্য সচেতনতা শিবির করায় মানুষ সচেতন হয়েছে।তারা কোন জায়গায় আহত প্রাণী,পশু শিকারী দেখলে মঞ্চের সদস্য-সদস্যাদের ফোন করে জানায়। মঞ্চের সদস্য-সদস্যারা বন দফতরের সাহায্য নিয়ে তা সংরক্ষণ করে।
বন দফতরের উলুবেড়িয়া রেঞ্জ অফিসার রাজেশ মুখোপাধ্যায় বলেন,” আমাদের পক্ষ থেকে যে সমস্ত এলাকায় এই সমস্ত প্রাণী চলাচলের রাস্তা সেই সব এলাকায় গাড়ি চালকদের সচেতনতার জন্য বোর্ড বসানো হচ্ছে।”
বাস্তবে দেখা যাচ্ছে সচেতনতা মূলক বোর্ড থাকা সত্ত্বেও গাড়ি চালকরা গাড়ির গতি কমান না। ফলে প্রাণীদের মৃত্যু হচ্ছে।আইন ভঙ্গকারী এই সমস্ত চালকদের প্রতি প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানান হাওড়া জেলা যৌথ পরিবেশ মঞ্চ-র কর্মী, সদস্য-সদস্যারা।
হাওড়া আমতা থেকে অভিজিৎ হাজরা।