জলমগ্ন বাঁকুড়া জেলার গ্রামবাসীদের উদ্ধারের আসরে বিষ্ণুপুরের মহকুমাশাসক অনুপ কুমার দত্ত।

বর্ধমান ডিভিশন বাঁকুড়া স্বাস্থ্য

গত নিম্নচাপের বৃষ্টিতে ডুবেছে কলকাতাসহ জেলার উত্তর থেকে দক্ষিণের একাধিক অঞ্চল। বাদ যায়নি বাঁকুড়া শহরও। জলমগ্ন হয়েছে একাধিক গ্রাম। ঠিক সেই সময়ই হাত-পা গুটিয়ে বসে না থেকে গ্রামবাসীদের উদ্ধারের কাজে লেগে পড়লেন বিষ্ণুপুরের মহকুমাশাসক অনুপ কুমার দত্ত।

তার মহৎ কাজের এই ছবি উঠে আসেনি কোনো সংবাদমাধ্যমে ক্যামেরায়, বরং সেই ছবি উঠে এসেছে স্থানীয় এলাকাবাসীদের মোবাইলের ক্যামেরায়। ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে সেই ছবি। তার সাথে একটি ভিডিও ক্লিপিংস ও দেখা যায়। সেই ভিডিওতে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে, সোনামুখী এক জলমগ্ন গ্রামে চারিদিক ডুবে তার মধ্যে দুগ্ধপোষ্য এক শিশুকে পরম মমতায় কোলে নিয়ে মহকুমাশাসকের নিরাপদ স্থানে যাচ্ছেন এবং ডান হাতে আরেকটি মেয়েকে নিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর,২২ টি ব্লকের গ্রাম পঞ্চায়েত ও পুরসভা মিলিয়ে কমবেশি করে ২২৫ টি এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৭৪ টি ত্রাণশিবির খোলা হয়। এখনো পর্যন্ত সেখানেই ৯ হাজার ২২৪ জনকে উদ্ধার করে আনা হয়। নিম্নচাপের জেরে বন্যার পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বাঁকুড়ায়। যার কারণে ২ হাজার ১৫১ টি বাড়ি ভেঙে পড়ে এবং ২৪ হাজার লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এই বৃষ্টির ফলে ক্রমশ ফুলেফেঁপে উঠছে শালী নদী। যার কারণে প্লাবিত হচ্ছে সোনামুখী ব্লক এর বেশ কয়েকটি গ্রাম।এই বিপর্যয় মোকাবিলায় দপ্তরের কর্মীদের সঙ্গে জলে নেমে পড়লেন খোদ মহকুমাশাসক অনুপ কুমার দত্ত ও এসডিপিও। পাশাপাশি সোনামুখী ব্লক সংলগ্ন পিতারবনি গ্রাম থেকে মানুষ দের সরিয়ে নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসা হয়।

তাছাড়াও বঙ্গের এই দুদিনের বৃষ্টিতে শহরতলির এক অংশ এখনো জলের তলায়। যার ফলে বিপর্যস্ত হচ্ছে মানুষ।বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের জেরে বুধবার ভোর রাত থেকেই শুরু হয় বৃষ্টি।যার কারণে অন্যান্য জেলার পাশাপাশি বাঁকুড়া জেলা জুড়ে প্রবল বৃষ্টিপাত হয়। ফলে নাজেহাল বাঁকুড়া গ্রামবাসী। রাস্তাঘাট ঘরবাড়ি একাধিক এলাকা জলমগ্ন। আবহাওয়া দপ্তর থেকে জানানো হয়েছিল,হালকা থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। সেক্ষেত্রে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে বাঁকুড়ার গ্রামবাসীরা। পাশাপাশি নদীগুলি তে বাড়ছে জলস্তর। এখন এলাকাবাসীদের একটাই চিন্তা কবে আবার পরিস্থিতি ঠিক হবে।

এমত অবস্থায় দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে প্রায় দু লক্ষ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হলে পাশাপাশি গ্রামগুলোতে জল ঢুকে পড়ে। ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের বিপাকে পড়তে হচ্ছে। সেচ দপ্তর সূত্রে খবর, এই জল ছাড়ার পরিমাণ ধাপে ধাপে আরও বাড়বে। জল ছাড়ার ফলে প্লাবনের আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে বর্ধমান, হুগলি, হাওড়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে। পুজোর মুখে কি তবে বন্যার আশঙ্কা? চিন্তায় ফেলেছে বর্ধমান ও বাঁকুড়ার প্রশাসনিক আধিকারিকদের।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *