দোকান খুলতেই মদ কিনতে লম্বা লাইন

জেলার খবর রাজ্য

ডিজিটাল ডেস্ক:দু’সপ্তাহের বেশি সময় পর মঙ্গলবার কলকাতা ও আশপাশে বিভিন্ন সামগ্রীর খুচরো দোকানগুলো খুললেও তেমন ভিড় দেখা গেল না। ব্যতিক্রম অবশ্য মদের দোকান। টানা ১৬ দিন পর সুরার দোকান খুলল বলে কথা!
করোনার সংক্রমণ কিছুটা কমতে বিভিন্ন জিনিসপত্রের খুচরো দোকান বা রিটেল শপ দুপুর ১২টা থেকে বেলা ৩টে পর্যন্ত খোলা থাকতে পারে বলে রাজ্য সরকার জানিয়েছে। এই নতুন ব্যবস্থা কার্যকর হয়েছে মঙ্গলবার থেকে। রাজ্যে আত্মশাসন জারি করা হয়েছে ১৬ মে। তার পর থেকে বাজারের পাশাপাশি কেবল নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দোকান সকাল ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকছিল।
রাজ্য সরকারের ঘোষণা মতো এ দিন মদের দোকান থেকে কলেজ স্ট্রিটের বইয়ের দোকান, প্রসাধনী সামগ্রীর দোকান শহরে খুলে গিয়েছে। বিধিনিষেধ ঘোষণার পর থেকে শহরের বিভিন্ন বাজারে, বিশেষ করে সব্জি বাজারে স্বাস্থ্যবিধি ভাঙার ছবি রোজ চোখে পড়ছে। তবে এ দিন শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণ ঘুরে দেখা গেল, ১৬ দিন পর খোলা খুচরো দোকানগুলোয় সে ভাবে ক্রেতাই নেই। অধিকাংশ দোকানিই ব্যস্ত দোকানঘর সাফ ঘরতে। ব্যতিক্রম অবশ্য মদের দোকান। বহু দোকানেই সুরাপ্রেমীদের লম্বা লাইন।
মদের দোকান বাদে অন্যান্য দোকানে কেন ভিড় হলো না? ব্যবসায়ীদের একটা বড় অংশের বক্তব্য, নাগরিকদের অনেকেই জানতেন না, মঙ্গলবার এই সব দোকান খুলবে। সেই জন্যই প্রথম দিন তেমন ক্রেতা হয়নি। দিন কয়েকের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে ব্যবসায়ীরা মনে করছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিধিনিষেধ শিথিল করার জন্য ব্যবসায়ীরা ধন্যবাদও জানিয়েছেন।
দমদমের প্রাইভেট রোডের মদের দোকানে এ দিন দুপুর সাড়ে ১২টায় লম্বা লাইন দেখা গেল। কমবেশি একই ছবি সল্টলেক থেকে ভিআইপি রোড, দক্ষিণ কলকাতা, উত্তর কলকাতার বেশ কয়েকটি মদের দোকানে। তবে বড়বাজারে এ দিন জামাকাপড়, প্রসাধন সামগ্রীর দোকান খুললেও সে ভাবে ক্রেতাদের দেখা যায়নি। বড়বাজার এলাকার কাপড় ব্যবসায়ী সুরেশ আগরওয়াল বলছিলেন, ‘করোনার কারণে গত এক বছর ধরেই ব্যবসায় ভাটা চলছে। তার উপর টানা দু’সপ্তাহ দোকান বন্ধ থাকার জেরে আর্থিক দিক থেকে ভীষণ সমস্যা হচ্ছিল। সবাইকে অনুরোধ করব, নিয়ম মেনে চলুন, তা হলেই আর বেশিদিন বিধিনিষেধ থাকবে না।’ কলেজ স্ট্রিট চত্বরে ১৫ দিন পর বইয়ের দোকান খুললেও ক্রেতার সংখ্যা ছিল হাতেগোনা। তবে পুস্তক ব্যবসায়ী সন্তোষ ধরের কথায়, ‘দোকান খুলে কী লাভ? স্কুল-কলেজ থেকে বাস, লোকাল ট্রেন সবই বন্ধ। দোকানে ক্রেতারা আসবেন কী ভাবে?’ নিউ মার্কেট চত্বরে খুচরো দোকান খুললেও লোকজনের সংখ্যা ছিল নগণ্য। একই চিত্র গড়িয়াহাট, হাতিবাগান এলাকায়।

বিশিষ্ট চিকিৎসক সুকুমার মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘এখন সংক্রমণ কিছুটা কমেছে, ফলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে খুচরো দোকানদাররা ব্যবসা চালাতেই পারেন।’
ব্যবসায়ীদের একাংশের আশা, দোকান যখন একবার খুলেছে, তখন অল্প কিছু দিনের মধ্যে বিক্রিবাটা কিছুটা তো হবেই। কলকাতা পুরসভার প্রশাসনিক বোর্ডের সদস্য, বাজার বিভাগের দায়িত্বে থাকা আমিরউদ্দিন(ববি) এ দিন ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘ব্যবসা করুন, তবে মুখে জোড়া মাস্ক পরে এবং শারীরিক দূরত্ববিধি বজায় রেখে।”

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *