দিঘার ভগ্নরূপ দেখতে গিয়ে সমুদ্রে তলিয়ে গেলেন হাওড়ার ২ পর্যটক

জেলার খবর রাজ্য

ডিজিটাল ডেস্কঘূর্ণিঝড় ইয়াস-এর তাণ্ডবে তছনছ হয়ে গিয়েছে স্বপ্ন সুন্দরী দিঘা। দিঘার সেই ধ্বংসাত্মক রূপ চাক্ষুষ করতে গিয়ে সমুদ্রে তলিয়ে গেলেন হাওড়ার দুই পর্যটক। গুরুতর জখম হয়েছেন আরও দুজন। মঙ্গলবার মর্মান্তিক এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে দিঘা উপকূলে। শোকের ছায়া নেমে এসেছে হাওড়ার লিলুয়ায় ওই যুবকদের পরিবারে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত দুই পর্যটকের নাম নূর মহম্মদ মিদ্যা (৪৭) ও মইদুল নস্কর (৩৮)। তাঁরা হাওড়ার লিলুয়া থানার জগদীশপুরহাট এলাকার বাসিন্দা। তাঁদের দুই বন্ধু গুরুতর জখম অবস্থায় কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জানা গিয়েছে, বিভিন্ন টিভি ও সোশ্যাল মিডিয়ায় দিঘার ধ্বংসাত্মক রূপ দেখার পর নিজের চোখে সেই দৃশ্য দেখার ইচ্ছা হয়েছিল হাওড়ার লিলুয়ার চার যুবকের। তাই রাজ্যে জারি থাকা কার্যত লকডাউনের বিধি-নিষেধ উপেক্ষা করেই দুটি বাইকে করে লিলুয়া থানার জগদীশপুরহাট এলাকা থেকে চারজন সোজা চলে আসেন দিঘায়। তারপর সমুদ্রে স্নান করার লোভ তাঁরা ছাড়তে পারেননি। ফলে তাঁরা সোজা চলে যান ওল্ড দিঘার সমুদ্রতটে। যদিও এখনও সমুদ্রে নামায় নিষেধেজ্ঞা জারি রয়েছে। পাহাড়া দিতে নুলিয়া, পুলিশ সমুদ্রতটে ঘোরাঘুরিও করছে। নুলিয়ারা চার ব্যক্তিকে সমুদ্রতটে দেখতে পেয়ে সমুদ্রে নামার ব্যাপারে নিষেধ করেন। কিন্তু নুলিয়াদের কথায় কর্ণপাত করেননি হাওড়ার ওই চার পর্যটক। ফলে নুলিয়ারা একটু আড়াল হতেই চারজন নেমে পড়ে সমুদ্র-স্নানে। তাঁরা হয়ত ভাবতে পারেননি, ইয়াস চলে গেলেও সমুদ্র এখনও শান্ত হয়নি। তাই উত্তাল সমুদ্রে নামার পরই ঘটে যায় বিপত্তি।
কিছুক্ষণ পরে চারজনকে সমুদ্রে তলিয়ে যেতে দেখতে পান নুলিয়ারা। সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা সমুদ্রে নেমে চারজনকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে চারজনকে দিঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। সেখানেই নূর মহম্মদ মিদ্যা ও মইদুল নস্করকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। বাকি দুজনের অবস্থাও গুরুতর। তাঁদের কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
বেপরোয়া আচরণের জন্যই যে হাওড়ার এই দুজনের মৃত্যু হল এবং দুজন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে, তা বলা বাহুল্য। তবে এই ঘটনায় অভিযোগের কাঠগড়ায় উঠেছে পুলিশ-প্রশাসনও। ইয়াস ও কোভিড পরিস্থিতিতে কার্যত লকডাউনের মধ্যে চারজন হাওড়া থেকে দিঘায় বাইকে করে এলেন এবং কোথাও কীভাবে পুলিশের নজরে পড়লেন না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এমনকি দিঘায় কড়া পুলিশি নজরদারি থাকা সত্ত্বেও কীভাবে তাঁরা সমুদ্র-স্নানে নামলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে দিঘা পুলিশ জানিয়েছে।
অন্যদিকে, দিঘা থানার তরফে ইতিমধ্যে চারজনের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। মৃত দুই ব্যক্তির দেহ ময়নাতদন্তের পরই তাঁদের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে দিঘা পুলিশ জানিয়েছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *